খুব সহজেই যেকোনো ধরনের প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) খুবই জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার। যেকেউ চাইলে কোডিং জ্ঞ্যান ছাড়াই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারে এই ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যারটিকে ব্যবহার করে।
ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যবহার অনেক সহজ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ায় এর জনপ্রিয়তাও অনেক বেশি। যাইহোক, আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে এই পোস্ট আপনাকে দারুণভাবে সহযোগিতা করবে।
এখানে, আমরা জানব একদম শুরু থেকে ধাপে ধাপে কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় এবং একটি পরিপূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে যা যা লাগে বা যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হয়, সেই সব বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন দেয়া হবে।
এতে করে আপনি খুব সহজেই আপনার নিজের জন্য কিংবা আপনার ব্যবসার কাজে ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারবেন কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই।
যাইহোক, মুল আলোচনায় যাওয়ার আগে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে কিছুটা ধারণা, যেমন ওয়ার্ডপ্রেস কি, ওয়ার্ডপ্রেস কেন ব্যবহার করা হয়, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে যা যা দরকার হয় ইত্যাদি বিষয় গুলো সম্পর্কে জানা দরকার।
ওয়ার্ডপ্রেস কি
সহজ কথায়, ওয়ার্ডপ্রেস হল একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার সফটওয়্যার। যেটিকে ব্যবহার করে খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়।
মূলত, ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (Content Management System) যাকে সংক্ষেপে CMS বলা হয়। এই ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যারকে ব্যবহার করে ওয়েবসাইট এর যাবতীয় বিষয় গুলো ম্যানেজমেন্ট তথা পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
এটি ব্যবহার করা সম্পূর্ণ ফ্রি এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ায় অন্যান্য ওয়েবসাইট তৈরির প্লাটফর্ম এর তুলনায় WordPress এর জনপ্রিয়তা সব থেকে বেশি। অর্থাৎ যেকেউ চাইলে এই ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার টিকে ব্যবহার করে কোন ধরনের প্রোগ্রামিং বা কোডিং ধারণা ছাড়াই প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারে।
কিন্তু অনেকেই wordpress.com এবং wordpress.org এই দুটিকে নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়ে যান, অর্থাৎ কোন প্লাটফর্ম টি দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়, বা কোন প্লাটফর্মটি ব্যবহার করা উত্তম।
বিশেষ করে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে যাদের ধারণা খুব কম তাদেরই বেশির ভাগ এই সমস্যা গুলো দেখা দেয়।
যাইহোক, বেশীরভাগ সময় WordPress বলতে wordpress.org কেই বোঝানো হয়ে থাকে।
যদিও wordpress.org এবং wordpress.com এর মধ্যে যথেষ্ট কাজের মিল রয়েছে, কিন্তু এদের মধ্যে অনেকটা পার্থক্যও রয়েছে।
wordpress.com হল ওয়ার্ডপ্রেস এর অফিসিয়াল হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে আপনাকে সরাসরি Hosting সুবিধা দেয়া হবে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য। শুধু মাত্র এখানে আপনার আলাদাভাবে একটি ডোমেইন নেম কিনে যুক্ত করতে হবে।
আর বাকি সমস্ত ফিচারগুলো প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ হিসেবে কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করা বেশ ঝামেলার।
অন্যদিকে, wordpress.org একটি ফ্রি ব্লগ পাবলিশিং টুল বা সফটওয়্যার। যেটিকে ব্যবহার করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র একটি ডোমেইন নেম এবং হোস্টিং সার্ভার কিনে তারপর ফ্রিতেই এই সফটওয়্যারটিকে ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করা থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট যাবতীয় বিষয়গুলো পরিচালনা করার জন্য।
অনেকে ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রি হওয়ার কথা শুনে ফ্রিতেই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা ভাবেন। যদিও wordpress.com এ ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করার সুযোগ আছে, তবে এখানে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলেও অনেক বিধিনিষেধ মানতে হয়।
কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার অর্থাৎ wordpress.org এটিকে ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং সার্ভার কিনে নিতে হবে। তারপর আপনার Hosting Server এর Cpanel থেকে WordPress Software Install করে ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগেঃ
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনার যা যা লাগবে তা হল-
১। একটি ডোমেইন নেম (Domain Name)
২। হোস্টিং সার্ভার (Hosting Server)
৩। ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে বেসিক ধারণা
অর্থাৎ, WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি Domain Name and Hosting Server কিনতে হবে। এরপর ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে আপনার যদি বেসিক ধারণা থেকে থাকে, তাহলে সহজে আপনি নিজেই আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
তবে, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কত টাকা লাগে বা কত টাকা খরচ হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার চাহিদার ওপর বা আপনি কত টাকা ইনভেস্ট করবেন সেটার ওপর। অর্থাৎ, আপনার বাজেট অনুযায়ী ভালমানের Hosting Server কিনে ওয়েবসাইট সেটআপ করতে পারেন।
যেমন, একটি ডোমেইনের দাম প্রতিবছরের জন্য ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা ফি দিতে হয়, আবার হোস্টিং সার্ভার গুলো Package অনুযায়ী বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে, যেমন, Shared Hosting এর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০০ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে।
পাশাপাশি কোন প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করতে চাইলে সেই থিমের দামও বিবেচনায় রাখতে হবে।
আর আপনি যদি কোন ডেভেলপার কে দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপ করিয়ে নেন, সেক্ষেত্রে সেই ডেভেলপার এর জন্য আলাদাভাবে ফি দিতে হবে। কিন্তু আপনি যদি নিজেই এই সব গুলো কাজ করতে পারেন সেক্ষেত্রে ডেভেলপার দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির খরচ টা দিতে হবে হবেনা।
সুতরাং, শুধুমাত্র ডোমেইন নেম এবং হোস্টিং এর দাম বিবেচনা করে আপনি চাইলে ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকার মধ্যেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন।
যাইহোক, WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যা যা লাগবে এবং যেসব কাজ গুলো করতে হবে সেগুলো হলঃ-
১। ডোমেইন নেম – Domain Name
ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ডোমেইন নেম (Domain Name) কিনতে হবে। এই ডোমেইন নেমটিই হবে আপনার ওয়েবসাইট এর নাম তথা এড্রেস বা লিংক। যেই লিংক বা ওয়েবসাইট এড্রেস ব্যবহার করে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারবে।
যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করার পূর্বেই একটি ডোমেইন নেম নির্বাচন করে নিতে হয়। আর ডোমেইন নেম নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী।
অর্থাৎ, আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য এমন একটি Domain Name বাছাই করতে হবে, যেটি হবে ইউনিক, সহজে মনে রাখা যাবে, সেই সাথে ডোমেইন নেম টি যেন খুব বেশি জটিল না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রয়োজনে এমন একটি Domain Name পছন্দ করা যেতে পারে, যা ওয়েবসাইট এর নিশ বা বিজনেস এর সাথে সম্পর্কিত হয়।
আপনার পছন্দ মত ডোমেইন নেম এর আইডিয়া খুজে পেতে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন-
সাধারণত একটি ডোমেইন নেম এর দাম প্রতি বছরের জন্য ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে, আপনি যদি কোন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন নাম কিনেন তাহলে কিছুটা কম দামে এবং প্রথম বছরের জন্য কিছু ছাড়ও পেতে পারেন।
২। হোস্টিং- Hosting Server
ওয়েবসাইট এর জন্য একটি ডোমেইন নেম নির্বাচন করার পর Hosting Server কিনতে হবে। Hosting Server এ মূলত আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত কন্টেন্ট বা ফাইল গুলো আপলোড করা থাকবে।
অনলাইনে দেশী এবং বিদেশী বিভিন্ন ধরনের Domain and Hosting কোম্পানি রয়েছে, যারা একেক ধরনের Hosting সেবা দিয়ে থাকে। আপনার পছন্দ মত যেকোনো Domain Hosting Provider বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে Hosting Server কিনে নিতে পারেন।
তবে, ভালমানের Hosting Server এবং Support পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই স্বনামধন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু নাম করা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের কাছ থেকে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য Domain এবং Hosting কিনতে পারেন।
যেমন, Bluehost, Site Ground, Cloudways, WPEngine, Hostinger, Namecheap ইত্যাদি। তবে এই সকল প্রতিষ্ঠান থেকে Domain and Hosting কিনতে হলে আপনার Master Card এবং Dollar এর প্রয়োজন হবে।
আর যদি মাস্টারকার্ড না থাকে, তাহলে দেশীয় কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কিনতে পারেন। এখন দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠানই একই সাথে ডোমেইন নেম এবং ভালো মানের Hosting সেবা দিয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠান ভেদে হোস্টিং এর দাম একেক রকমের হয়ে থাকে। আপনার চাহিদা মত Hosting Package কিনতে পারেন।
তবে একেবারে শুরুর দিকে, বিশেষ করে আপনার যদি বাজেট কম থাকে, তাহলে Shared Hosting Server দিয়েই শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনি যদি বাংলাদেশি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হোস্টিং কিনেন, সেক্ষেত্রে Hosting Package গুলোর দাম সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
৩। cPanel থেকে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল
আপনি যখন কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনবেন, তখন তারা আপনাকে আপনার ইমেইলে cPanel এ লগ ইন করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একটি মেইল পাঠাবে। সেই মেইল থেকে cPanel এ লগইন করার password এবং Username ব্যবহার করে cPanel ড্যাশবোর্ড এ লগইন করতে পারবেন।
cPanel এ লগইন করার জন্য আপনার ডোমেইন এর শেষে /cpanel, উদাহরণস্বরূপঃ yourdomain.com/cpanel লিখে লিংকটি ভিজিট করলেই সিপ্যানেল এ লগইন করার ফর্ম চলে আসবে। এরপর আপনার সেই মেইল এ থাকা লগইন করার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলে cPanel Dashboard এ যেতে পারবেন।

এখন, সিপ্যানেল থেকে সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রথমে cPanel ড্যাশবোর্ড এ Search অপশন থেকে Softaculous লিখে সার্চ করলে SOFTACULOUS APPS INSTALLER নামের একটি software দেখতে পাবেন, যেখান থেকে ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যারটি সিলেক্ট করে ইন্সটল করলেই ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার টি ইন্সটল হবে এবং ওয়েবসাইট তৈরির জন্য কিছু তথ্য দেয়ার অপশনগুলো দেখতে পাবেন।

এই অপশন গুলোতে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য Username, Password দিয়ে অপশনগুলো পুরণ করতে হবে।
এই অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে Install বাটনে ক্লিক করলেই নতুন একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে যাবে।
এখন আপনাকে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ড এ লগইন করার জন্য আপনার ওয়েবসাইট বা ডোমেইন এর শেষে /wp-admin বা উদাহরণস্বরূপঃ yourdomain.com/wp-admin লিখে লিংকটি ভিজিট করলে লগইন ফর্ম দেখতে পাবেন।
এই ফর্ম টিতে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার সময় যে username এবং password দিয়েছেন, সেই Password এবং username টি দিয়ে লগইন করলেই আপনার ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ড এ ঢুকতে পারবেন।
৪। ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ড এ লগইন এবং ওয়ার্ডপ্রেস সেটআপ
সফলভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ড এ লগইন হয়ে যাওয়ার পর আপনার ওয়েবসাইটকে পরিপূর্ণ রুপ দেয়ার জন্য বেশ কিছু সেটিং রয়েছে যেগুলো পরিবর্তন বা কাস্টমাইজ করে নিতে হবে।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম পরিবর্তন
প্রথমত ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার সাথে সাথে একটি Default Theme ইন্সটল করা থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে আপনার এই থিম এবং ওয়েবসাইটের ডিজাইন টিকে পরিবর্তন করার জন্য আলাদা থিম ইন্সটল করে নিতে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রচুর ফ্রি এবং প্রিমিয়াম থিম রয়েছে। চাইলে আপনার পছন্দমত ফ্রি অথবা প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইট এর ডিজাইন টিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন।
- ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য সেরা কয়েকটি ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রি থিম- তালিকা।
- নিউজপেপার ওয়েবসাইটের জন্য সেরা কয়েকটি থিম।
ওয়েবসাইটের নতুন থিম পরিবর্তন করার জন্য প্রথমে আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ড এর Appearance>>Theme>>add new অপশনে গেলেই নতুন থিম পরিবর্তন করার অপশন দেখতে পারবেন।
নতুন থিম ইন্সটল এবং একটিভেট করার পর, Theme Customizer অপশন থেকে আপনার ওয়েবসাইট টিকে প্রয়োজন মত কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস সেটিং – WordPress Settings
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেটিং রয়েছে যেগুলো সঠিকভাবে এডিট করে নেয়া জরুরী।
সেজন্য আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এর ড্যাশবোর্ড থেকে Settings এর General অপশনটিতে যেতে হবে, এখানে ওয়েবসাইটের Site Title, Tagline, Site Address URL, Site Language পরিবর্তন করে নিতে হবে।

এরপর, Settings এর Reading অপশন থেকে আপনার ওয়েবসাইটের হোমপেজ এ কোন পেজটিকে ডিসপ্লে করাবেন এবং কোন পেজ টিকে ব্লগ পেজ বা পোস্ট পেজ হিসেবে রাখবেন, সেটি উল্লেখ করে দিতে পারেন।
এরপর, Settings এর Permalinks Options থেকে পোস্ট এর permalink structure টি পরিবর্তন করে Post Name অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
প্রয়োজনীয় প্লাগিন ইন্সটল করা- Necessary Plugins Installation
একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে যেমন, Security Plugins, SEO Plugin, Page Builder Plugins, Addons ইত্যাদিসহ আরও অনেক। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্লাগিন গুলো ইন্সটল করে নিতে পারেন।
প্রয়োজনে গুগলে সার্চ করলেই এইসব ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনের তালিকা পেয়ে যাবেন।
Plugin Install করার জন্য আপনাকে Appearance>>plugins>>add new অপশনটিতে যেতে হবে। এখান থেকে আপনি চাইলে সরাসরি আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড করা Upload Plugin অপশন থেকে প্লাগিন আপলোড করে ইন্সটল করে নিতে পারেন অথবা নিচের সার্চ বারে প্লাগিনের নাম সার্চ করে ইন্সটল ও একটিভেট করে নিতে পারেন।
নতুন পেজ তৈরি এবং মেনু যুক্ত করা
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য যে যে পেজ তৈরি করা আবশ্যক সেগুলো Admin Dashboard থেকে Pages>>Add New অপশন থেকে নতুন পেজ তৈরি এবং পাবলিশ করতে পারবেন।
আর এইসকল পেজ গুলোকে মেনু তে ডিসপ্লে করার জন্য আপনাকে Appearance>>Menus এ গিয়ে Main-Menu নামে একটি Menu Name তৈরি করে নিতে হবে।
এরপর প্রয়োজনীয় পেজ গুলোকে Drag and Drop করে Main-Menu তে যোগ করতে হবে। এরপর এটিকে Save Change করলেই মেনুটি হোমপেজ এর Header এ মেনু হিসেবে দেখা যাবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন পরিবর্তন বা কাস্টমাইজেশন (WordPress Website Customization)
একটি ওয়েবসাইটকে প্রফেশনাল রুপ দেয়ার জন্য বেশ কিছু ডিজাইন যুক্ত করা বা পরিবর্তন করতে হয়। এক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটটিকে যদি ভালভাবে ডিজাইন বা কাস্টমাইজ করতে চান সেক্ষেত্রে একটি ভালো মানের প্রিমিয়াম ওয়ার্ডপ্রেস থিম ব্যবহার করতে পারেন।
কেননা, একটি প্রিমিয়াম থিমে প্রচুর ফিচার যুক্ত করা থাকে যেগুলো ভালভাবে ব্যবহার করে খুব সহজেই দারুন সব ওয়েবসাইট ডিজাইন তৈরি করে ফেলা যায়।
যাইহোক, আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের বেসিক ডিজাইন গুলো পরিবর্তন বা কাস্টমাইজ করতে চান, তাহলে ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ড এ Appearance>>Customize অপশন থেকে আপনার ওয়েবসাইটকে Customize করে নিতে পারেন, যেমন Changing Fonts, Font Size, Colors, Header, Footer, Menu, Widgets, Typography, Logo, ইত্যাদি।
৫। পোস্ট তৈরি এবং পাবলিশ
ওয়েবসাইটের ডিজাইন ভালোভাবে কাস্টমাইজ করা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এরপর আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট যুক্ত করা অর্থাৎ নতুন পোস্ট তৈরি করে তা পাবলিশ করতে পারেন।
এজন্য, আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ড্যাশবোর্ড থেকে Post অপশন থেকে নতুন পোস্ট তৈরি এবং পাবলিশ করতে পারবেন।
পাশাপাশি পোস্ট গুলোকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বা সার্চ র্যাঙ্কিং এ নিয়ে আসার জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে Google Search Console, Google Analytics এ যুক্ত করে দিতে হবে।
সেই সাথে WordPress SEO Plugin ব্যবহার করে পোস্ট গুলোকে ভালভাবে Search Engine Optimize করে নিতে পারেন। SEO plugin গুলোর মধ্যে Yoast SEO এবং Rank Math SEO Plugin দুটি বেশ জনপ্রিয়।
এই দুই প্লাগিনের যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইটকে SEO optimize বা সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করার জন্য।
পরিশেষেঃ
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং পরিচালনা করা খুব কঠিন কোন বিষয় নয়। যেকেউ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে নিজের পছন্দ মত ওয়েবসাইট ডিজাইন করে নিতে পারে, কোন ধরনের প্রোগ্রামিং জ্ঞ্যান ছাড়াই।
যেহেতু ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা সহজ এবং এটি যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি (User-Friendly) হওয়ায় অন্যান্য ওয়েবসাইট বিল্ডার বা সিএমএস এর তুলনায় ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি।
তাছাড়া, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট এর জন্য অনলাইনে প্রচুর ফ্রি এবং প্রিমিয়াম ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। চাইলে এসব ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট গুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই দারুন সব ওয়েবসাইট তৈরি করে নেয়া যায়।
এছাড়াও, ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারের আরেকটি সুবিধা হল, ইন্টারনেটে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত প্রচুর ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং আর্টিকেল রয়েছে, যার ফলে এখন ওয়ার্ডপ্রেসের নিয়ে যেকোনো ধরনের সমস্যা তৈরি হলে খুব সহজেই সেটার সমাধান পাওয়া যায়।
যাইহোক, ওপরে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার যেসব ধাপগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো ভালভাবে অনুসরণ করলে খুব সহজেই আপনি নিজেই আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন।