ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ কি কি – ফ্রিল্যান্সিং কাজের তালিকা

You are currently viewing ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ কি কি – ফ্রিল্যান্সিং কাজের তালিকা

ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং খুবই জনপ্রিয় একটি উপায়। বর্তমানে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রচুর কাজ রয়েছে এবং দিন দিন কাজের পরিমাণ বেড়েই চলছে। সেই সাথে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যাও বাড়ছে।

বর্তমানে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংকে একটি ক্যারিয়ার বা পেশা হিসেবে বেছে নিতে চায় কিন্তু কিভাবে, কোথা থেকে শুরু করবে, বা কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করবে, তা নিয়ে অনেকেই বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।বিশেষ করে নতুন ফ্রিল্যান্সার বা ফ্রিল্যান্সিং এ যারা একেবারেই নতুন তাদের মধ্যে এই সমস্যাগুলো বেশি হয়।

যেমন, ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ রয়েছে বা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ কি কি, নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজ গুলো (Freelancing Jobs for Beginners) সব থেকে ভালো, কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা সব থেকে বেশি বা কোন কাজে ইনকাম বেশি হয়, ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে কম বেশি অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে।

যদিও অনলাইনে Freelancing এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায় এবং একেক কাজের একেক রকম Market Demand বা চাহিদা রয়েছে এবং আয়ের পরিমাণও কাজ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, কিন্তু একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য সঠিক বা উপযুক্ত কাজ বেছে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এতে যেমন কাজ করার আগ্রহ ভালো থাকে বা দ্রুত সফল হওয়া যায় এবং ভবিষ্যতেও কাজ বা ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়না।

মূলত, এই পোস্ট থেকে জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ বা ফ্রিল্যান্সিং কাজের তালিকা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে, যা নতুন ফ্রিল্যান্সারদের বা যারা Freelancing করতে চায় তাদের জন্য উপযুক্ত ফ্রিল্যান্সিং কাজ(Freelancing Jobs) বেছে নিতে সাহায্য করবে।

জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ- Best Freelancing Jobs List in Bangla

বর্তমানে অনলাইনে বিশেষ করে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে ফ্রিল্যান্সিং এর এতো এতো কাজ রয়েছে যে সব গুলো কাজকে একসাথে একটি পোস্টে আলোচনা করা কঠিন।

তারপরও, বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর যেসব জনপ্রিয় কাজ রয়েছে বা যে ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলোর চাহিদা সব থেকে বেশি সেগুলোর তালিকা এখানে দেয়া হল।

১। ডিজিটাল মার্কেটিং- Digital Marketing

ফ্রিল্যান্সিং জগতে বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় সেক্টরটি হল ডিজিটাল মার্কেটিং। বর্তমানে অনলাইনে যেসব ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা তুলনামূলক ভাবে বেশি তার মধ্যে Digital Marketing অন্যতম।

জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের বাহিরে এমনকি বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটেও Digital Marketing কাজের চাহিদা অনেক বেশি। বর্তমানে ছোট, বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে নিজেদের প্রচারণার কাজ করে থাকে, যার ফলে এই কাজের পরিধি যেমন বাড়ছে তেমনি ডিজিটাল মার্কেটারদেরও চাহিদা বাড়ছে।

তবে, ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বড় একটি সেক্টর, আর এই সেক্টরে আবার আলাদা অনেকগুলো ক্যাটেগরি বা কাজের ক্ষেত্র রয়েছে।

চাইলে Digital Marketing এর যেকোনো এক বা একাধিক ক্যাটেগরিতে দক্ষতা অর্জন করে Freelancing Career শুরু করা যেতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এ কি কি ধরনের জব পাওয়া যায় এবং এসব জবের স্যালারি কেমন তা দেখুন এই লিংকে- Types of Jobs in Digital Marketing by Indeed.

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান যেসব ক্যাটেগরি রয়েছে-

  • Search Engine Optimization (SEO)
  • Social Media Marketing (SMM)
  • Content Marketing
  • Email Marketing
  • PPC (Pay Per Click)
  • Mobile Marketing
  • Influencer Marketing
  • Affiliate Marketing
  • Video Marketing

২। গ্রাফিক্স ডিজাইন- Graphics Design

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং জগতে গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজের চাহিদা অনেক বেশি সেই সাথে এটি অনেক জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং কাজ।

এখন প্রায় প্রতিটি কোম্পানি বা বিজনেসের জন্য লোগো ডিজাইন থেকে শুরু করে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেয়া বা অন্য যেকোনো কারনে বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যার ফলে, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে।

Graphics Design অনেক বড় একটি ইন্ডাস্ট্রি এবং এই ইন্ডাস্ট্রিতে আলাদা অনেকগুলো ক্যাটেগরি রয়েছে। আর প্রতেকটি ক্যাটেগরি বা কাজের ক্ষেত্রগুলোর আলাদা মার্কেট ডিম্যান্ড রয়েছে, পাশাপাশি আয়ের পরিমাণও একেক রকম।

চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এক বা একাধিক ক্যাটেগরিতে নিজেকে দক্ষ করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যেতে পারে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টরটি কিন্তু সবার জন্য নয়, বা চাইলেই যেকেউ এই সেক্টর নিয়ে কাজ করে সফল হতে পারেনা।

মূলত, এই সেক্টরটিতে কাজ করার জন্য অবশ্যই নিজস্ব কিছু Creativity থাকতে হয় এবং ডিজাইনে খুব ভালো পারদর্শী হতে হয়।

যাইহোক, গ্রাফিক্স ডিজাইনের বেশ কিছু ক্যাটেগরি বা শ্রেণীবিভাগ রয়েছে-

  • Brand Identity/ Logo Design
  • Publication graphic design
  • UI/UX Design
  • Marketing & advertising graphic design
  • Packaging graphic design
  • Motion graphic design
  • Art and illustration for graphic design

৩। কন্টেন্ট রাইটিং – Content Writing

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এর মধ্যে ফ্রিল্যান্স রাইটিং বা ফ্রিল্যান্স লেখালেখি বেশ জনপ্রিয় একটি সেক্টর। সারাবিশ্বে কন্টেন্ট রাইটিং এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

মূলত যাদের লেখালেখি করতে ভালো লাগে বা এই বিষয়ে যাদের বেশ দক্ষতা আছে, তারা চাইলেই লেখালিখিকে একটি পেশা হিসেবে Freelancing ক্যারিয়ার শুরু করতে পারে। অনলাইন বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে একজন ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে Content Writing সেবা প্রদান করে আয় করা যেতে পারে।

যেহেতু বর্তমানে এই কাজের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে, তাই এই কাজের মাধ্যমে বেশ ভালো পরিমাণ আয় করা সম্ভব।

কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরটিতে আবার বেশ কয়েকটি ক্যাটেগরি বা কাজের ক্ষেত্র রয়েছে, তাই যেকোনো একটি ক্যাটেগরিকে বেছে নিয়ে সেই বিষয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। সারাবিশ্বে যেহেতু ইংরেজি কন্টেন্ট এর চাহিদা বেশি তাই ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।

Writing এর জনপ্রিয় কিছু ক্যাটেগরিঃ

  • Article/ Blog Post Writing
  • Website Content writing
  • Copywriting
  • Creative Writing
  • CV/Cover Letter Writing
  • Research Work and Informational Product
  • Book/ eBook Writing
  • Technical Writing
  • Academic Writing

৪। ডাটা এন্ট্রি- Data Entry Freelance Job

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সহজ কাজ গুলোর মধ্যে ডাটা এন্ট্রি অন্যতম। অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং কাজের তুলনায় এই কাজটি কিছুটা সহজ হওয়ায় নতুন অনেক ফ্রিল্যান্সার কাছে পছন্দের তালিকায় এটি প্রথম।

কাজটি সহজ হলেও এই কাজে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হয়, বিভিন্ন টুলস এর ব্যবহার জানার পাশাপাশি টাইপিং স্পীডেও (Typing Speed) ভালো হতে হয়। মূলত, যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চায় বা অল্প দক্ষতা দিয়েই ফ্রিল্যান্সিং করতে চায় তাদের জন্য ডাটা এন্ট্রির কাজ গুলো মোটামুটি ভালো।

তবে, যেহেতু এই কাজটি তুলনামুলকভাবে সহজ তাই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে এই কাজের কম্পিটিশন অনেক বেশি। অনেক সময় নতুনদের জন্য কাজ পেতেও বেশ বেগ পেতে হয়। তবে ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে এই কাজেও নিজেকে সফল করে তোলা সম্ভব।

ইউটিউব ভিডিও দেখেই মোটামুটি ডাটা এন্ট্রির বেসিক কাজ গুলো শিখে নেয়া যায়, তবে এই বিষয়ে নিজেকে এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজ খুঁজে পেতে প্রয়োজনে ভালো কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ডাটা এন্ট্রি কোর্স করা যেতে পারে।

৫। ভিডিও এডিটিং- Video Editing Freelance Job

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এর মধ্যে Video Editing অন্যতম। অনলাইনের দুনিয়ায় এখন ভিডিও কন্টেন্ট এর চাহিদা অনেক বেশি।

বর্তমানে ছোট বড় যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই ভিডিও কন্টেন্ট এর চাহিদা ব্যাপক। বিশেষ করে ইউটিউব এর জন্য ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউটিউব ছাড়াও আরও বিভিন্ন কাজে এখন ভালো মানের ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা দুটোই রয়েছে।

যাদের ভিডিও এডিটিং এ ভালো জ্ঞ্যান আছে বা এই বিষয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে, তারা চাইলে এই সেক্টরটিতে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করে দিতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর বাহিরেও এখন প্রচুর ভিডিও এডিটিং এর কাজ রয়েছে। সাধারনত, Video Editing এর দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে আয়ের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে।

ভিডিও এডিটিং এরও বেশ কিছু আলাদা আলাদা সেক্টর রয়েছে। একদম সহজ কাজ থেকে শুরু করে বড় ধরনের প্রোজেক্ট ভিত্তিক কাজও হয়ে থাকে। ভিডিও এডিটিং এর কি কি কাজ পাওয়া যায় এবং কোন ক্যাটেগরিতে নিজেকে দক্ষ করা ভালো, তা জানতে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলো থেকে আইডিয়া নেয়া যেতে পারে।

৬। প্রোগ্রামিং এন্ড টেক- Programing & Tech

ফ্রিল্যান্সিং জগতে একটি বড় অংশ দখল করে আছে প্রোগ্রামিং এর কাজ গুলো। প্রোগ্রামিং বেশ বড় একটি ইন্ডাস্ট্রি এবং এখানে আরও অনেকগুলো কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে যেগুলোর মার্কেটে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

প্রায় প্রতিটা মার্কেটপ্লেস গুলোতে Programing এর ওপর বিভিন্ন ধরনের জব ক্যাটেগরি রয়েছে। মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রগুলো সাধারণত এই সেক্টরটিতে রয়েছে।

যাদের মূলত প্রোগ্রামিং বা কোডিং সম্পর্কে ভালো জ্ঞ্যান বা দক্ষতা আছে তাদের জন্য এই সেক্টর ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য উপযুক্ত। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য প্রোগ্রামিং এর যেকোনো ক্যাটেগরিকে বেছে নিয়ে নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস বা মার্কেটপ্লেসের বাহিরেও কাজ করা যেতে পারে।

Programing and Tech এর মধ্যে যেসব ক্যাটেগরি রয়েছেঃ

  • Web Programing
  • Mobile Apps Development
  • Game Development
  • Desktop Application Development
  • Ecommerce Development
  • Support and IT
  • Cyber Security and Data Protection
  • Data Science, Data Processing, Data Engineering
  • NFT Development
  • Blockchain and Cryptocurrency

৭। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট- Virtual Assistant

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এর মধ্যে আরেকটি জনপ্রিয় কাজ হল ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant). ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টরা সাধারণত ঘরে বসেই অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাদের বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে

এই কাজ গুলোর মধ্যে রয়েছে- Email management, social media management, data entry, research, writing, customer service, making phone calls, meeting scheduling, bookkeeping ইত্যাদি সহ আরও অনেক রকমের কাজ রয়েছে।

এমন অনেক ক্লাইন্ট বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের এই সকল কাজ করার মত হাতে সময় থাকেনা বা ব্যস্ততার কারনে করতে পারেনা, যার কারনে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হায়ার করে এই কাজ গুলো করিয়ে নেয়।

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ঘণ্টা প্রতি ১৫-২৫ ডলার আয় করার সুযোগ রয়েছে। তবে এটি নির্ভর করে কাজের দক্ষতা, কাজের ধরণ এবং ক্লাইন্ট এর চাহিদার ওপর। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে অনলাইনে ফ্রিল্যান্স জব করার জন্য বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা জরুরী।

৮। ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট- Web Design & Development

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজের অন্যতম এবং সেরা একটি কাজ হল ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। যদিও এটি প্রোগ্রামিং সেক্টর এর একটি অংশ। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং জগতে বড় একটি অংশ দখল করে আছে Web Development সেক্টরটি।

আর ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কাজের চাহিদাও অন্য সব কাজের তুলনায় একটু বেশি। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বেশ ভালো রেট এ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ গুলো (Web Development Freelancing Jobs) করা হয়ে থাকে। যার ফলে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরটি বেছে নিচ্ছে।

সারা বিশ্বে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। যেহেতু অনলাইনে যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য একটি ওয়েবসাইট গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে, তাই ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট এর কাজের চাহিদা পূর্বের তুলনায় এখন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাই, অনলাইনে Freelancing Career শুরু করার জন্য এবং ভালো পরিমাণ আয় রোজগার করার জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ বেছে নেয়া যেতে পারে।

৯। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার- Social Media Manager Freelancing Job

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মত সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর জবটিও খুবই জনপ্রিয়। সারাবিশ্বে এমন অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট গুলো ম্যানেজমেন্ট করার জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকেনা বা এই বিষয়ে অনেকেরই সঠিক জ্ঞ্যান থাকেনা।

যার ফলে তারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার বা এক্সপার্টদের হায়ার করে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা থেকে শুরু করে পেইড মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন পরিচালনা, নিয়মিত পোস্ট করা, কন্টেন্ট লেখা সহ অনেক গুলো কাজ করিয়ে নেয়।

তাই, যাদের বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া যেমন Facebook, Twitter, Instagram ইত্যাদি ব্যবহারে সঠিক ধারণা রয়েছে, পাশাপাশি একই সাথে অনেক গুলো কাজ করার মানসিকতা রয়েছে তারা চাইলে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এই সেক্টরটিকে বেছে নিতে পারে।

Fiverr, Upwork, Indeed, Freelancer.com, People Per Hour ইত্যাদি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে Social Media Manager এর কাজ বা জব পাওয়া যায়। সচিয়াল মিডিয়া ম্যানেজাররা সাধারণত ঘণ্টা প্রতি ২০-২৫ ডলার বা তারও বেশি চার্জ করে থাকে।

১০। Accounting And Consulting

ফ্রিল্যান্সিং কাজের আরও একটি বড় সেক্টর হল Accounting and Consulting Jobs। এই সেক্টরে আরও জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি আলাদা আলাদা ক্যাটেগরি রয়েছে, যেগুলো নিয়েও ফ্রিলান্সিং করে অর্থ উপার্জন করা যায়।

Accounting and Consulting এর জব গুলো সাধারণত Fiverr, Upwork, Indeed, People Per Hour ইত্যাদি মার্কেটপ্লেস গুলোতে পাওয়া যায় এবং এসব কাজের বিনিময়ে বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

এই সেক্টরটিতে সাধারণত কোন ব্যক্তি, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক হিসাব বা Business Analysis থেকে শুরু করে Financial Analysis, Bookkeeping ইত্যাদি সহ আরও অনেক রকমের কাজ রয়েছে।এই সেক্টর এর

আরও জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্যাটেগরি-

  • Accounting
  • Recruiting
  • Bookkeeping
  • HR Administration
  • Financial Management
  • Financial Analysis
  • Tax Preparation
  • Training and Development
  • Business Analysis, Business Consulting
  • Financial Consulting
  • HR Consulting
  • Business Plan and Business Analysis

Freelancing এর এইসব কাজ ছাড়াও অনলাইনে আরও অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। আর একেকটি কাজের ধরন ও চাহিদা একেকরকম। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পেতে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে আইডিয়া নেয়া যেতে পারে।

এতে করে জনপ্রিয় Freelancing এর কাজ সমূহ সম্পর্কে বা ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ মার্কেটে রয়েছে সে সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাওয়া যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশিঃ

ফ্রিল্যান্সিং শুরুর পূর্বে অনেকেই জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজের চাহিদা বেশি, বা কোন কাজে বেশি ইনকাম হয়, এবং কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলো বেশি জনপ্রিয় ইত্যাদি।

আসলে Freelancing এর প্রায় প্রত্যেকটি কাজেরই চাহিদা আছে। হয়তো কিছু কিছু কাজ খুব কঠিন হতে পারে, আবার কিছু কাজ সহজ, আবার কোন কোন কাজ মার্কেটে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়, আবার কোন কোন কাজের রেট কম বা বেশিও হতে পারে। এগুলো সব কিছু নির্ভর করে কাজের ধরন, কাজের দক্ষতা, ক্লাইন্ট এর চাহিদা, ইত্যাদির ওপর।

তারপরও মার্কেটে এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো খুবই জনপ্রিয় এবং মার্কেটেও অনেক চাহিদা। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, যেসব কাজের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং কাজটি যখন সহজ হয়, সবাই যখন সেই কাজের পিছনে ছুটে, তখন সেই কাজের কম্পিটিশন বা প্রতিযোগিতা বহুগুণে বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, অনেকেই যথেষ্ট স্কিল থাকা সত্ত্বেও কাজ পায়না।

তাই, শুধু কাজের চাহিদা এবং বেশি ইনকাম এর ওপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার আগে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কোন কাজটি নিজের জন্য উপযুক্ত বা কোন কাজ গুলো করে ভালো অর্থ উপার্জন করা যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং এর কোন সেক্টর এ ক্যারিয়ার গড়বেন বা কোন কাজটি বেছে নিবেনঃ

ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে প্রথমেই নিজে চিন্তা করুন আপনার কোন কাজটি করতে ভালো লাগে, বা আপনি কোন কাজে বেশি আকৃষ্ট, সেই কাজটি নিয়ে অনলাইনে কিছুটা রিসার্চ করে নিন।

প্রয়োজনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলো ঘুরে কাজের চাহিদা, কাজের প্রতিযোগিতা কেমন সেগুলো দেখে নিন। সেই সাথে কাজটি শেখার প্রয়োজনীয় রিসোর্স আছে কিনা সেটিও দেখে নিন।

এতে করে আপনার সেই কাজের প্রতি আলাদা ভালো লাগা কাজ করবে বা সেই কাজে আপনি তাড়াতাড়ি সফল হতে পারবেন।

নতুন এমন অনেকেই আছেন যারা অন্য কারো ইনকাম এর পরিমাণ বেশি দেখে হুট করেই সেই বিষয় নিয়ে উঠেপড়ে লাগে। পরিণতিতে অনেকেই ভালোভাবে কাজটি না শিখেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ খোঁজা শুরু করে এবং যখন কাজ পায়না বা সেভাবে ইনকাম করতে পারেনা তখন সহজেই হতাশ হয়ে পড়ে।

এমন অনেকেই আছে যারা শুধু ডাটা এন্ট্রির কাজ করেই মাসে হাজার ডলার আয় করে, আবার অনেকে ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা ওয়েব ডেভেলপার হওয়া সত্ত্বেও কাজ পায়না বা আয় করতে পারেনা। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে গেলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য এবং পরিশ্রম দরকার হয়, তাই যেকোনো কাজে লেগে থাকার মন মানসিকতা থাকলে সেই কাজে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

তাই, আপনাকে নিজেই খুজে বের করতে হবে আপনার কোন কাজটি পছন্দ বা কোন কাজটি করতে চান, অন্য কেউ এসে বলে দিলেও সেই কাজে আপনি সফল হবেন কিনা সন্দেহ।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেনঃ

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং শেখার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগ/ আর্টিকেল থেকে শুরু করে ইউটিউব ভিডিও, এবং অনেক রকমের পেইড কোর্সও রয়েছে। চাইলে অনলাইন থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্লগ/ আর্টিকেল কিংবা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখার মাধ্যমে ফ্রিতেই Freelancing শেখা যেতে পারে।

কোন বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করবেন বা কোন বিষয়ে আপনার জানা প্রয়োজন তা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট বা ইউটিউব ভিডিও দেখার মাধ্যমে সহজেই জেনে নেয়া যায়।

তবে, নতুন অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং শিখতে গেলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। অনেকে এতো এতো গাইডলাইন বা রিসোর্স পেলেও সঠিকভাবে কোন কাজে দক্ষতা অর্জন করবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। আর ফ্রিতে শিখতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়, সেই সাথে নিজের মনোযোগ ধরে রেখে কাজ শেখার আগ্রহও কমে যায়।

তাই সব থেকে ভালো হয় স্বনামধন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে ইচ্ছুক সেই বিষয়ে কোর্স করা যেতে পারে। এতে করে সঠিক গাইডলাইন পাওয়ার পাশাপাশি কাজের দক্ষতা অর্জন খুব দ্রুত হয় সেই সাথে কাজের আগ্রহ অনেক বেশি থাকে।

পরিশেষেঃ

উপরে উল্লেখিত ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ বা তালিকা ছাড়াও অনলাইনে আরও প্রচুর ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ (Online Freelance Jobs) রয়েছে। পূর্বের তুলনায় বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কাজের পরিমাণ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতিনিয়তই Freelancing কাজের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।

সেই সাথে নতুন করে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যাও যেমন বাড়ছে তেমনি প্রতিযোগিতাও বাড়ছে। আর এই প্রতিযোগিতায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে এবং সফল হতে গেলে দরকার সঠিক কাজ নির্বাচন এবং দক্ষতা অর্জন।

This Post Has 9 Comments

  1. Md shofikul islam

    ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ… এত সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য

  2. Kalid bin Oalid

    Thank you so much for your valuable information ☺️

  3. Md Abdul Matin

    Thanks bhai so much for valuable information

  4. Amin

    thank

  5. Saiful

    আমার নাম মো. সাইফুল ইসলাম আমার বাড়ি নোয়াখালী

  6. সুমন হোসেন

    এতো সুন্দর করে লেখার জন্য ধন্যবাদ

  7. Md. Nazir Ahmad

    ভালো লাগলো, শুকরিয়া।

Leave a Reply