ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার ১০টি সেরা উপায়

You are currently viewing ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার ১০টি সেরা উপায়

অনলাইনের যুগে এখন যেকেউ চাইলে ঘরে বসেই অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারে। অনলাইনে এখন হাজারো রকমের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে, নির্দিষ্ট কোন কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে যেকেউ চাইলে অনলাইন থেকে খুব ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারে।

বর্তমানে বেশ কিছু জনপ্রিয় ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলোতে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ পাওয়া যায়।

সেই সব Freelancing Marketplace গুলোতে নিজের স্কিল বা দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়।

পড়াশোনার পাশাপাশি প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে যথেষ্ট সময় (Free Time) থাকে, সেই ফ্রি সময়কে কাজে লাগিয়ে যেকেউ চাইলে অনলাইনে নিজের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারে বা অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারে। 

ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে, যারা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ (Expert) বা অভিজ্ঞ। যেমন, কেউ লেখালেখিতে খুবই দক্ষ, আবার কেও ইংরেজি ভালো পারে, কেউবা ফটোগ্রাফিতে এক্সপার্ট, কেউ ডিজাইনে, কেউ ভিডিও এডিটিং এ, কেউ সফটওয়্যার এর কাজ ভালো পারে, তারা চাইলেই কিন্তু এসব স্কিল দিয়েও অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারে।

যাইহোক, আপনি যদি একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইন থেকে আয় করতে চান তাহলে এই পোস্ট আপনাকে দারুণ ভাবে সহযোগিতা করবে।

১। আর্টিকেল লিখে আয় (Article Writing)

যাদের লেখালিখি করতে ভাল লাগে বা লিখালিখিতে যথেষ্ট পারদর্শী তারা খুব সহজেই অনলাইনে কন্টেন্ট লিখে বা আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন।

বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটার বা আর্টিকেল রাইটারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রিলান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে আর্টিকেল রাইটিং এর ওপর প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। এরকম কয়েকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট যেমন Fiverr, Upwork, Freelancer.com সহ আরও অনেক।

ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট লিখালিখি থেকে শুরু করে, ব্লগ পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, এবং পণ্য বা সেবার বর্ণনা সহ অনেক রকমের আর্টিকেল রাইটিং কাজ রয়েছে।  

এক্ষেত্রে যারা ইংরেজিতে ভাল এবং ইংরেজিতে লিখার অভিজ্ঞতা আছে, তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠান এর পাশাপাশি বিদেশী বা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান এর সাথে কাজ করতে পারেন। দেশে বা দেশের বাহিরে যেকোনো প্রতিষ্ঠান এর হয়ে আর্টিকেল রাইটার হিসাবে কাজ করার মাধ্যমে খুব ভাল পরিমাণ আয় করা সম্ভব।

লেখার মান এবং কাজের ওপর ভিত্তি করে লেখকদের আয়ের পরিমাণ কম বা বেশি হয়ে থাকে। সাধারনত লেখালিখির কাজ গুলো হয়ে থাকে ঘণ্টা চুক্তি, বা ওয়ার্ড এর ওপর ভিত্তি করে অথবা প্রোজেক্ট ভিত্তিক।

যাইহোক ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা উপায় হতে পারে আর্টিকেল রাইটিং বা কন্টেন্ট রাইটিং করা।

২। ফটোগ্রাফি- অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়

আপনার যদি ফটোগ্রাফি করতে ভাল লাগে এবং দারুন দারুন ছবি তুলতে পারেন, তাহলে অনলাইনে আপনার তোলা ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন।

ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা শখ এর বশে ফটোগ্রাফি করে থাকেন। কিন্তু সেই শখকে পেশাদারিক (Professional) কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে সহজেই আয় করা যেতে পারে।

অনলাইনে এমন অনেকে Stock Photography Website আছে, যেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ বিক্রি করা যায়। এইসব ওয়েবসাইট গুলোতে নিজের তোলা ছবি বা ভিডিও ফুটেজ বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করা যায়।

তবে একজন ভাল ফটোগ্রাফার হতে গেলে অবশ্যই ফটোগ্রাফি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা দরকার এবং এই বিষয়ে কিছুটা স্কিল বা দক্ষতার প্রয়োজন আছে। আপনি চাইলে এই বিষয়টি ভাল ভাবে শিখে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করতে পারেন।

ফটোগ্রাফি করার জন্য আপনার একটি DSLR ক্যামেরার প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি ছবি গুলোকে আরও সুন্দর এবং আকর্ষণীয় রুপ দেয়ার জন্য ফটোশপ এর ব্যবহার জানতে হবে।

৩। গ্রাফিকস ডিজাইন

বর্তমানে গ্রাফিকস ডিজাইন এর ওপর প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। এছাড়া, গ্রাফিক ডিজাইনারদের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গ্রাফিক ডিজাইন এর অনেক গুলো ক্যাটেগরি বা ক্ষেত্র রয়েছে। যেগুলোর কোন একটি টপিক এর ওপর দক্ষতা অর্জন করে অনলাইনে সেবা প্রদান করতে পারেন।

যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান এর জন্য লোগো ডিজাইন থেকে শুরু করে Business Card, Web Design, Marketing & Advertising Design, UI/UX design, Apparel Design, Photo Editing, T-Shirt Design সহ আরও অনেক রকমের কাজ আছে এই গ্রাফিক্স ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রি এর ওপর।

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এর জন্যই গ্রাফিকস ডিজাইন এর প্রয়োজন পড়ে। ফলে এই সব কাজ জন্য ভাল মানের গ্রাফিক ডিজাইনারদের দরকার হয়ে থাকে।

ছাত্রদের অনলাইনে ইনকাম করার একটি জনপ্রিয় উপায় হতে পারে গ্রাফিকস ডিজাইন। পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইন স্কিল টি শিখে নিয়ে অনলাইনে কাজ করা যেতে পারে।

অনলাইনে বেশ কিছু ফ্রিলান্সিং ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে গ্রাফিক ডিজাইন এর ওপর অনেক কাজ পাওয়া যায়। এরকম একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হল ফাইভার। এখানে আপনার দক্ষতা অনুযায়ী গ্রাফিক ডিজাইন সম্পর্কিত কাজ বা সেবা প্রদান করতে পারেন।

গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে হলে আপনাকে কিছুটা সময় নিয়ে শিখতে হবে। অনলাইনে প্রচুর রিসোর্স আছে যেগুলো থেকে আপনি গ্রাফিক ডিজাইন সম্পর্কে বেশ ভাল আইডিয়া নিতে পারবেন।

T-Shirt Design শিখে অনলাইনে টাকা করার জন্য চাইলে এই কোর্সটি করতে পারেন-

৪। অনলাইনে পণ্য বিক্রি

অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা সেবা বিক্রি করে দেয়ার মাধ্যমেও আয় করা যায়। অনলাইনে বিক্রি করা যায় এমন কোন পণ্য আপনি যদি তৈরি করতে পারেন অথবা আপনার কাছে থাকে তাহলে সেই পণ্য নিয়ে অনলাইনে বিজনেস শুরু করতে পারেন।

বর্তমানে যেহেতু অনলাইনে কেনার বেচার বিষয়টি বেশ জনপ্রিয়, তাই আপনিও এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আপনার শিক্ষাজীবনে ভাল একটি আয়ের পথ তৈরি করে নিতে পারেন।

অনলাইনে বিক্রি করার জন্য এমন হাজারো প্রোডাক্ট রয়েছে, আপনার পছন্দ মত যেকোনো পণ্য বেছে নিয়ে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।

আপনি যদি কোন পণ্য তৈরি করতে নাও পারেন তারপরও আপনি নিজের একটি অনলাইন বিজনেস শুরু করতে পারবেন। কেননা এমন অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের কাছ থেকে আপনি পাইকারি পণ্য নিয়ে খুচরা বিক্রি করতে পারেন।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার জন্য ফেসবুককে বেছে নিতে পারেন। ফেসবুকে একটি বিজনেস পেজ তৈরি করে সেখানে আপনার পণ্য সম্পর্কে প্রচার প্রচারনা চালাতে এবং পন্যের বিজ্ঞাপন ও দিতে পারবেন।

তাই, পড়ালেখার পাশাপাশি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে দেয়ার মাধ্যমেও দারুন একটি আয়ের পথ তৈরি করতে পারেন।

৫। ডাটা এন্ট্রি

অনলাইনে আয় করার জন্য বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় উপায় হল ডাটা এন্ট্রির কাজ। অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। অনেকে এই ডাটা এন্ট্রির কাজ করেই মাসে হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে থাকে।

বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হল Fiverr। এই মার্কেটপ্লেসে প্রচুর পরিমানে ডাটা এন্ট্রির কাজ পাওয়া যায়।

ডাটা এন্ট্রির কাজ তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য কাজের থেকে কিছুটা সহজ হওয়ায় এবং সহজেই শিখে ফেলা যায় বিধায় অনেকেই Data entry এর কাজ শিখে ফাইভার সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করে টাকা ইনকাম করে থাকে।

Data Entry কাজ করার জন্য আপনার একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর প্রয়োজন হবে এবং সেই সাথে মাইক্রোসফট অফিস এর বিভিন্ন সফটওয়্যার এর ব্যবহার ভালোভাবে জানতে হবে। তাহলেই আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে অনলাইনে থেকে টাকা আয় করা শুরু করতে পারবেন।

প্রয়োজনে ডাটা এন্ট্রির কাজ ভালোভাবে শিখে অনলাইন থেকে দ্রুত টাকা ইনকাম করার জন্য চাইলে কোর্স করা যেতে পারে।

৬। ভিডিও এডিটিং

ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার আরেকটি সেরা উপায় হল ভিডিও এডিটিং। একজন ভাল মানের ভিডিও এডিটর হিসেবে অনলাইন থেকে বেশ ভাল পরিমাণ আয় করা যায়।

বর্তমানে যেহেতু ভিডিও কন্টেন্ট এর জনপ্রিয়তা তুলনামুলক ভাবে বেশি তাই প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরদের মার্কেটে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আপনি যদি ভিডিও এডিটিং(Video Editing) সম্পর্কে ভালভাবে জেনে থাকেন তাহলে আপনার পড়াশোনার পাশাপাশি একজন ভিডিও এডিটর হিসেবে অনলাইনে কাজ করতে পারেন।  

আর আপনি যদি ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে ভাল না ও জানেন এবং যদি এই বিষয়ে শেখার আগ্রহ থাকে তাহলে ভিডিও তৈরির বিভিন্ন সফটওয়্যার(Video Editing Software) গুলোর ব্যবহার ভালভাবে শিখে নিতে পারেন।

এরপর বিভিন্ন ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন Fiverr, Upwork সহ বেশ কিছু ফ্রিলান্স ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে আপনার ভিডিও এডিটিং সার্ভিস অফার করতে পারেন।

তাছাড়া, বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও কন্টেন্ট এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের মালিক বা ইউটিউবার রা তাদের চ্যানেলের ভিডিও তৈরির জন্য এক বা একাধিক ভিডিও এডিটরদের নিয়োগ দিয়ে থাকে।

তাই আপনি ভিডিও এডিটিং শিখে নিয়ে সেই সকল ইউটিউবারদের জন্য ভিডিও এডিটিং সেবা দিতে পারেন।

অথবা আপনি নিজেই আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করে দিতে পারেন যেখানে আপনার পছন্দ মত ভিডিও তৈরি করে চ্যানেলে প্রকাশ করতে পারেন। পরবর্তীতে চ্যানেল Monetization করে আয় করতে পারবেন।

একজন ভাল ভিডিও এডিটর হিসাবে অনলাইনে প্রচুর কাজ পাওয়ার এবং ভালমানের আয় করার সম্ভাবনা আছে।

তাই, আপনিও একজন স্টুডেন্ট হিসেবে পড়ালেখার পাশাপাশি ভিডিও এডিটর হয়ে অনলাইনে দারুন একটি কর্ম ক্ষেত্র তৈরি করতে পারেন। 

৭। ব্লগিং

অনলাইন থেকে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হল ব্লগিং। ব্লগ থেকে আয় করার বিষয়টি বর্তমানে প্রায় সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয় এবং অনেকে সফলভাবে ব্লগিং করে ভাল পরিমাণ আয়ও করছেন।

আপনার যদি লেখালিখিতে আগ্রহ থাকে এবং বিভিন্ন বিষয় বা টপিক নিয়ে লেখালিখিতে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে ব্লগিং শুরু করাটা আপনার জন্য একটি সেরা উপায় হতে পারে।

ব্লগে আপনার পছন্দের যেকোনো বিষয় বা টপিক নিয়ে লিখালিখি করতে পারবেন। আর ব্লগে যখন পর্যাপ্ত ভিজিটর আসবে তখন আপনি আপনার ব্লগ বিভিন্ন অ্যাডভারটাইজমেনট(Advertisements) প্রদর্শন করার মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয় করতে পারেন।   

তাছাড়া, ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করা যায় যেমন গুগল এডস, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, কোম্পানি স্পন্সরশীপ, পণ্য বিক্রি সহ আরও বেশ কিছু উপায় রয়েছে।  

তবে সফলভাবে ব্লগিং করার জন্য অবশ্যই লাভজনক একটি ব্লগিং নিশ বা টপিক বাছাই করা খুবই গুরুত্তপূর্ণ।  পাশাপাশি আপনি যেই নিশ নিয়ে কাজ করলে ভাল করতে পারবেন, বা আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ আছে এবং মার্কেটে চাহিদা (Market Demand) আছে সেই নিশ নিয়ে ব্লগিং করতে পারেন।  

ঘরে বসে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রদের অনলাইনে আয় করার একটি দারুন উপায় হতে পারে এই ব্লগিং পেশা। তাই একজন স্টুডেন্ট হিসেবে লিখালিখি করে বা ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইনে আয় করতে পারেন।

৮। ইউটিউবিং

একটি ইউটিউব চ্যানেল হতে পারে ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার একটি সেরা উপায়। ইউটিউব থেকে আয়ের বিষয়টি বর্তমানে সবার কাছেই কম বেশি পরিচিত।

একজন ছাত্র বা ছাত্রী হিসেবে আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তাহলে একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করে দিতে পারেন। যেখানে আপনার পছন্দের বিষয় এর উপর ভিডিও তৈরি করে চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন।  

ইউটিউব থেকে আয় করার অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে তবে তাদের মধ্যে গুগল এডসেন্স ই সেরা উপায়। এছাড়াও, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, কোম্পানি থেকে স্পন্সরশীপ, প্রোডাক্ট বিক্রি সহ আরও উপায় আছে একটি ইউটিউব চ্যানেলকে মনেটাইজ (Monetize) করার জন্য।

একটি ইউটিউব চ্যানেলের জন্য লাভজনক ইউটিউব চ্যানেল টপিক বা নিশ বেছে নিয়ে ইউটিউবিং শুরু করতে পারেন। চ্যানেল এর জন্য হাজারো টপিক রয়েছে। আপনি অন্যান্য ইউটিউবার দের চ্যানেল থেকে টপিক আইডিয়া নিতে পারেন এবং তাদের কন্টেন্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন।

তবে ইউটিউব চ্যানেল শুরু করার জন্য ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান বা ধারণা থাকা উচিত। আপনি চাইলে কিছুটা সময় দিয়ে ভিডিও এডিটিং ভালভাবে শিখে নিয়ে আপনার চ্যানেল এর জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারেন।

৯। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসাবে ঘরে বসে ছাত্র/ছাত্রীরা অনলাইনে থেকে সহজেই আয় করতে পারে।

এখন প্রায় বেশিরভাগ স্টুডেন্ট কোন না কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে। যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম সহ আরও অনেক।

এসব প্লাটফর্ম গুলোতে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসাবে কাজ করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়।

দেশে বিদেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের বিভিন্ন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে বিজনেস পেজ থাকে। এসব বিজনেস পেজ ম্যানেজমেন্ট বা দেখাশোনা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মানেজার দের দরকার হয়ে থাকে।  

প্রতিষ্ঠান এর বিভিন্ন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানাতে, গ্রাহকদের অনলাইন সেবা দিতে, বা গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে, পণ্য বা সেবার প্রচার-প্রচারনা চালাতে, নিয়মিত কন্টেন্ট তৈরি এবং প্রকাশ করা, প্রয়োজনীয় গ্রাফিকস ব্যবহার করা, ইত্য্যাদি কাজ সহ এমন অসংখ্য কাজ রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার দের দ্বারা সম্পাদন হয়ে থাকে।  

আর তাই, একজন ছাত্র হিসাবে আপনিও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।

অনলাইনে বেশ কিছু ফ্রিলান্স মার্কেট রয়েছে যেগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া মানেজার সম্পর্কে অনেক কাজ পাওয়া যায়।

১০। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা সহকারী হিসেবে অনলাইনে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর অনলাইন ভিত্তিক কাজ করে দেয়ার মাধ্যমে আয় করা যায়।

ছোট বড় এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান এর জন্য বিভিন্ন অনলাইন কাজ গুলো সম্পাদন করার জন্য পেশাদার কর্মী বা অনলাইন সহযোগী দরকার হয়ে থাকে। যারা সেই সব প্রতিষ্ঠান এর হয়ে ঘরে বসেই অনলাইনে বিভিন্ন কাজ করে দেয়ার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে।

এক্ষেত্রে কাজের দক্ষতা ভিত্তিতে অনলাইন সহযোগী বা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হয়।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট রা মুলত অনেক ধরনের কাজ করে থাকে, যেমন কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর জন্য ডেটা কালেকশন, ডেটা এন্ট্রি, ডেটা এনালাইসিস, রিসার্চ, কন্টেন্ট তৈরি এবং রাইটিং, মার্কেট রিসার্চ, গ্রাহক সেবা প্রদান, মিটিং ম্যানেজমেন্ট, ইমেইলিং, ফোন কল, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি সহ আরও অনেক গুলো বিষয় বা কাজ রয়েছে।

সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের কাছে সরাসরি কর্মী নিয়োগ দেয়ার সক্ষমতা থাকেনা বা তাদের কাছে এইসব বিষয় দেখাশুনা করার মত সময় থাকেনা, ফলে তারা বিভিন্ন ফ্রিলান্সারদের কে হায়ার করে থাকে এই সব কাজ করে দেয়ার জন্য।

অনলাইনে বেশ কিছু ফ্রিলান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে যেমন Fiverr, Freelancer.com, Upwork, People Per Hour সহ বেশ কিছু মার্কেটে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ পাওয়া যায়।

তাই আপনি একজন ছাত্র হিসেবে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে এইসব ফ্রিলান্স জব করতে পারেন অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে ফিক্সড জব ও করতে পারেন।

১১। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট

ওয়ার্ডপ্রেস হল বিশ্বের সব থেকে সেরা কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যাকে সংক্ষেপে CMS বলা হয়। আর এই ওয়ার্ডপ্রেসকে ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে থাকে।  

বিশ্বের ছোট বড় এবং নামীদামী অনেক প্রতিষ্ঠানই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে।  

পড়াশোনার পাশাপাশি এই ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যারটির ব্যবহার ভাল ভাবে শিখে নিয়ে অনলাইনে থেকে বেশ কিছু উপায়ে আয় করা যেতে পারে। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দেয়ার মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার বা আয়ের পথ তৈরি করা যায়।

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রচুর থিম পাওয়া যায়, যেগুলো ব্যবহার করে বা কাস্টমাইজ করার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের কোম্পানির জন্য একদম প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়।

বিভিন্ন প্রিমিয়াম থিম, প্লাগিন এবং টুলস এর ব্যবহার ভাল ভাবে শিখে নিতে পারলে কোডিং জানা ছাড়াও দারুন সব ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।

ওয়ার্ডপ্রেস এর ওপর অনলাইনে প্রচুর কাজ রয়েছে। বিভিন্ন ফ্রিলাসিং মার্কেট গুলোতে প্রতিনিয়তই ওয়ার্ডপ্রেস এর ওপর নতুন নতুন কাজ পাবলিশ হচ্ছে।  

পরিশেষেঃ

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার অনেকগুলো উপায় আছে। তার মধ্যে ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার বিষয়টি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

অনলাইনে যেহেতু কাজে পরিমাণ এবং ক্ষেত্র বাড়ছে তেমনি অনলাইনে আয় করার সহজ পদ্ধতি ও তৈরি হচ্ছে। ফলে, এখন যেকেউ চাইলে নিজের জ্ঞ্যান বা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারছে।

স্টুডেন্টরা চাইলে ওপরে উল্লেখিত যেকোনো একটি উপায় বেছে নিয়ে এবং ভাল ভাবে শিখে নিয়ে অনলাইনে থেকে সহজেই আয় করতে পারেন।

তবে, অনলাইনে আয় করতে গেলে অবশ্যই কোন একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে কাজ শুরু করাই সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

Leave a Reply